ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের একটি ‘অস্থায়ী কবরস্থানে’ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ভূখণ্ডটির উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দারা এই কবরস্থানটি তৈরি করেছিলেন। হামলায় নিহত অনেকের মরদেহ কবর থেকে ছিটকে বেরিয়ে আসে। খবর বার্তাসংস্থা আনাদোলুর।
উত্তর গাজা উপত্যকার সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক আহমেদ আল-কাহলোত বলেছেন, ‘ইসরায়েলি সেনাবাহিনী একটি গণকবরে বোমাবর্ষণ করেছে যেখানে কয়েকশ শহীদের লাশ দাফন করা হয়েছিল। ইসরায়েলি হামলায় নিহত এসব মানুষকে সম্প্রতি সমাহিত করা হয়েছিল। বোমা হামলার ফলে কবরস্থান ধ্বংস হয়ে যায় এবং এতে করে মাটির নিচ থেকে অনেক মৃতদেহ প্রকাশ্যে চলে আসে। বেসামরিক প্রতিরক্ষা দলগুলো বাইরে চলে আসা মৃতদেহগুলোকে পুনরায় সমাধিস্থ করার জন্য কাজ করছে।’
আনাদোলু বলছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের সকল গভর্নরেটের বাসিন্দারা আবাসিক এলাকা, বাড়ির আঙিনা এবং খেলার মাঠসহ বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী যৌথ এবং পৃথক কবর স্থাপনের পথ অবলম্বন করেছে।
বেসামরিক লোকদের ওপর ঘন ঘন হামলা করা ছাড়াও রাস্তা বন্ধ রাখা এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অবকাঠামো ধ্বংসের কারণে নিয়মিত কবরস্থানে প্রবেশ করা অসম্ভব বলে অস্থায়ী এসব কবরস্থানে লাশ দাফন করে আসছে ফিলিস্তিনিরা।
এছাড়া যুদ্ধের শুরু থেকেই সামরিক যানবাহন প্রবেশ করতে পারে এমন এলাকায় কবর খনন এবং সেগুলোতে হামলা করেই চলেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
ইচ্ছাকৃতভাবে কবরস্থানের মতো স্থানগুলোকে ধ্বংস করা এবং এগুলোকে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। ইসরায়েলের এই ধরনের কর্মকাণ্ড যুদ্ধাপরাধ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার ৪১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৭১ হাজার ৭০০ জন।