মুসলিম জাতির জন্য রমজান একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস। রমজান মাস সিয়াম সাধনা ও তাকওয়ার মাস। এ ছাড়াও এ মাসে রয়েছে কল্যাণ, বরকত। সারা রমজানকে ৩টি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। এগুলো হলো রহমত, মাগফিরাত এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তিলাভ। মহান আল্লাহ এ মাসটিকে বহু ফজিলত ও মর্যাদা দিয়ে অভিষিক্ত করেছেন। মাহে রমজান মুমিনদের আত্মগঠন ও প্রশিক্ষণের জন্য এক অনন্য সেরা মাস।
শুধু তাই নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষণীয় ঘটনার সাক্ষী এ পবিত্র মাস রমজান। এ মাসে নাজিল হয়েছে পবিত্র কোরআন। রমজান মাসে এমন একটি রাত রয়েছে, যা হাজার রাতের চেয়েও কল্যাণময় ও শ্রেষ্ঠ। আর এ রাতটি শবে কদর নামে পরিচিত।
আসন্ন রোজা যেন দরজায় কড়া নাড়ছে। তাইতো রমজানের প্রস্তুতি শুরু করেছেন বিশ্বের সব মুসলিম নর-নারী।
সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সব ধরনের পানাহার ও পাপাচার থেকে বিরত থেকে রোজা রাখেন মুসলিমরা। এর পর ইফতারের মাধ্যমে রোজা ভাঙেন তারা। এ বছর পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে পারে ১১ মার্চ (চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল) থেকে।
ভৌগোলিক অবস্থানভেদে অন্যবারের মতো এবারও রোজার সময় (ঘণ্টা) ভিন্ন ভিন্ন হবে।
যেসব দেশের মুসলিমরা ১৫ থেকে ১৮ ঘণ্টা রোজা রাখবেন
১. নুক, গ্রিনল্যান্ড
২. রেকজাভিক, আইসল্যান্ড
৩. হেলেনস্কি, ফিনল্যান্ড
৪. গ্লাসগো, স্কটল্যান্ড
৫. ওটোয়া, কানাডা
৬. লন্ডন, যুক্তরাজ্য
৭. প্যারিস, ফ্রান্স
৮. রোম, ইতালি
১০. মাদ্রিদ, স্পেন।
অন্যদিকে আফ্রিকা ও এশিয়ার দেশগুলোতে রোজা কম সময়ের হবে।
যেসব দেশগুলোর মানুষ ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা রোজা রাখবে
১. ক্রাইস্টচার্চ, নিউজিল্যান্ড
২. পুয়ের্তো মন্তে, চিলি
৩. জাকার্তা, ইন্দোনেশিয়া
৪. নাইরোবি, কেনিয়া
৫. করাচি, পাকিস্তান
৬. নয়াদিল্লি, ভারত
৭. ঢাকা, বাংলাদেশ
মধ্যপ্রাচ্য ও গালফ অঞ্চল
মধ্যপ্রাচ্য ও গালফ অঞ্চলের মুসল্লিরা এবার ১৩ থেকে ১৫ ঘণ্টা রোজা রাখবেন। স্থানভেদে এটি ভিন্ন ভিন্ন হবে।
সেহরির নিয়ত
সেহরির আলাদা কোনো নিয়ত বা দোয়া নেই। রোজা রাখার উদ্দেশ্যে সুবহে সাদিকের সময়ে যে পানাহার করা হয় সেটিকে ইসলামের পরিভাষায় সেহরি বলা হয়। তাই সেহরি খাওয়ার সময় অন্যান্য খাবারের যে দোয়া আছে তা পড়ে নেওয়া সুন্নত।
খাবারের আগের দোয়া
খাওয়া শুরু করার সময় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দোয়া পড়তেন,
بسم الله وعلى بركةالله
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি ওয়া আলা বারকাতিল্লাহ।
অর্থ : আল্লাহতায়ালার নামে খানা খাওয়া শুরু করছি এবং আল্লাহতায়ালার বরকত প্রার্থনা করছি।
রোজার আরবি নিয়ত
نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم
বাংলা উচ্চারণ : নাওয়াইতুআন আছুমা গাদাম, মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাক; ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছেপোষণ (নিয়ত) করলাম। অতএব, তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোজা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল করো, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।
ইফতারের দোয়া
ইফতারের আগে যে দোয়া পড়তে হয় তা হলো-
بِسْمِ الله – اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহ। আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু, ওয়াবিকা আমান্তু, ওয়া আ’লা রিজক্বিকা আফত্বারতু।
বাংলা অর্থ : আল্লাহর নামে (শুরু করছি)। হে আল্লাহ, আমি তোমারই জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেওয়া রিজিক দ্বারা ইফতার করছি। (আবু দাউদ, মিশকাত)।