Monday, December 23, 2024

সিঙ্গাপুর থেকে ভারতে গিয়ে ‘দেবতা’, ভক্তদের মল খাইয়ে আয় ৪৪ কোটি

আরও পড়ুন

৫৪ বছরের নারী উ মে হো। যিনি নিজেকে গডউইমেন বলে দাবি করেন। দেবতার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারেন সিঙ্গাপুরের এ বাসিন্দা। তিনি নিজেও স্বয়ং একজন দেবতা। এসব কথা রটিয়ে তৈরি করেছেন বহু ভক্ত, মানুষের সঙ্গে করেছেন প্রতারণা।

সম্প্রতি ওই নারীকে ১০ বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত।

ভারতীয় গণমাধ্যম জিনিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতারণা এবং মানুষের বিশ্বাসকে আঘাত করাসহ আরও ৫ অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয় ওই নারীকে। গত সপ্তাহে তাকে সাড়ে ১০ বছরের জন্য কারাগারে পাঠানো হয়।

অভিযোগ উঠেছে, ওই নারী তার ভক্তদের মল খেতে বাধ্য করেন। একই সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে ২০১২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ওই নারী প্রায় ৪৪ কোটি টাকা হাতিয়েছেন।

উ মে হো ভারতীয় আধ্যাত্মিক নেতা শ্রী শক্তি নারায়ণী আম্মায় বিশ্বাসী। যিনি ভারতে প্রায় ৩০ জন অনুসারীর একটি দলের নেতৃত্ব দেন। অনুসারীদের মধ্যে ১০ জনকে তার সঙ্গে রাখতেন। যেন তারা সবসময়ের জন্য ওই নারীর সেবা করতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নয়

২০২০ সালের মাঝামাঝিতে কয়েকজন অনুসারী উ মে হোর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। শারীরিক নির্যাতন, টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়। পরে ২০২০ সালের অক্টোবরে উ-কে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা হয়।

কীভাবে প্রতারণা করতেন এ নারী?

২০১২ সাল থেকে প্রায় আট বছর ধরে এই গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন উ। তার তথাকথিত আধ্যাত্মিক সেশনের সময় তাদের বোঝান যে তিনি দেবতা এবং আত্মার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন এবং ভক্তদেরকে তাকে ‘প্রভু’ বলে ডাকতে বলেছিলেন। এমনকি তার অনুসারীরা নিজেদের জন্য বা তাদের আত্মীয়দের সুস্থ করার জন্য তার কাছে যেতেন। সেই সুযোগ ফায়দা নিয়ে উ তাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন।

আরও পড়ুনঃ  জাহাঙ্গীর কবির নানকের বাসায় অভিযান, যা পাওয়া গেল

এমনকি ওই নারী তার ভক্তদের কি পরিমাণ সম্পত্তি আছে, তা বলার জন্য বাধ্য করতেন। তারপরে তাদের মিথ্যা কথা বললে দেবতাদের দ্বারা তাদের শাস্তি দেওয়া হবে বলে সতর্ক করে তাদের টাকা পাঠানোর জন্য রাজি করাতেন।

উ দাবি করেছেন যে, তিনি ওই অনুদান সংগ্রহ করে, গরু কেনা এবং মন্দির ও স্কুল নির্মাণের মতো প্রকল্পের জন্য ভারতে পাঠাবেন। তিনি তার অনুসারীদের উপাসনা হিসাবে সম্পত্তি এবং যানবাহন ক্রয় করার নির্দেশ দিয়েছেন, যা তিনি তার নিজের সুবিধার জন্য ব্যবহার করেছিলেন। ২০১২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ওই নারী প্রায় ৪৪ কোটি টাকা হাতিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ  বিএসএফের তাড়া খেয়ে নিখোঁজ, নদীতে ভাসছিল কিশোরের মরদেহ

উ তার অনুসারীদের মধ্যে ১০ জনকে তার সঙ্গে রেখেছিলেন। যাতে তারা সবসময়ের জন্য সেবা করতে পারে। শুধু তাই নয়, সে তাদেরকে ভারতে পাঠিয়েছিলেন গরু কেনা এবং মন্দির-স্কুল নির্মাণের মতো কাজের জন্য। উ তার ভক্তদের রীতিমতো বাধ্য করেছিলেন তার জন্য মুদির জিনিস কেনা, রান্না করা, ঘর পরিষ্কার করা, তাকে নিয়ে যাতায়াত করার জন্য।

কথার অমান্য করলে ভক্তদের সহিংস এবং অবমাননাকর শাস্তির মুখোমুখি হতে হতো। যার মধ্যে রয়েছে- বেত বা পেইন্ট ব্রাশ দিয়ে আঘাত করা, কাঁচি দিয়ে ছুরিকাঘাত করা, দাঁত টেনে বের করা, মানুষের মল খেতে বাধ্য করা এবং একটি বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলা থেকে লাফ দিতে বাধ্য করা।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ