Saturday, July 19, 2025

‘এমন বউ যেন কারও কপালে না জোটে’ লিখে স্ত্রীকে হত্যা

আরও পড়ুন

‘মা আমারে মাফ কইরা দিয়ো। অনেক স্বপ্ন ছিল তোমারে কোনোদিন কস্ট দিব না। কিন্তু এমন একজন মানুষ তুমি আমারে আইনা দিছ, যার অত্যাচার থেকে বাঁচতে এই সিদ্ধান্ত নিলাম। তিলে তিলে মরার চাইতে একবারে মরে গেলাম। সবাই আমারে মাফ কইরা দিয়ো। সে আমারে কয়েক মাসের মধ্যে মানসিক রোগী বানাইয়া ফেলছে। পরিশেষে সবার জন্য দোয়া করে গেলাম। এমন বউ জানি কারও কপালে না জোটে।’

বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুরে তিনতলা ভবনের একটি কক্ষ থেকে ২২ বছর বয়সী এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় মরদেহের পাশ থেকে স্বামীর মায়ের কাছে লেখা একটি চিঠি উদ্ধার করা হয়েছে।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বাকি টাকা পরিশোধের কথা জানিয়ে ওই চিঠিতে লেখা ছিল, ‘নিজে একাই মইরা যাইতাম। কিন্তু এরে যদি বাঁচাইয়া রাইখা যাই, এ আরও অনেক মানুষের জীবন নষ্ট করব, তাই মাইরা ফেললাম। অনেক স্বপ্ন ছিল রাসুলের সব সুন্নাহগুলো আমার জীবনে বাস্তবায়িত করমু, কিন্তু পারলাম না!’

আরও পড়ুনঃ  এবার বাসের মধ্যে নাবালিকাকে দলবদ্ধ ধর্ষণ

তার মায়ের মোবাইল নম্বর ও নিহত মীমের নানার মোবাইল নম্বর লিখে দেওয়া হয়েছে ওই চিঠির শেষাংশে।

শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের মাওনা উত্তরপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদের বাড়ির তিন তলার একটি কক্ষ থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে মীমের হত্যাকারী স্বামী আল আমিন না অন্য কেউ, তা উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।

নিহত মীম সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি থানার মুলকান্দি ছোট বেড়া খারুয়া ছোটপাড়া গ্রামের ইউসুফ আলীর মেয়ে। সে টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতি থানার কালাই গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে আল আমিন (২৪) এর স্ত্রী। আল আমিন শ্রীপুরের মাওনা গ্রামের স্বাদ গ্রুপের স্বাদ টেক্সটাইল মিলে সিনিয়র হেলপার পদে চাকরির সুবাদে স্ত্রীকে নিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করতেন।

আরও পড়ুনঃ  গোপালগঞ্জে আ.লীগ নেতাসহ ৩৩০৬ জনকে আসামি করে সেনাবাহিনীর মামলা

বাড়িটির তত্ত্বাবধায়ক মো. মোস্তাকিম জানান, ৩ মাস আগে মীম-আল আমিন দম্পতি ওই বাড়ির তিন তলার ৩৩ নম্বর রুমে ভাড়ায় উঠেন। বুধবার দুপুর ১টার দিকে আল আমিনের সহকর্মী আরিফ বাসায় এসে জানান, আল আমিন তার স্ত্রী মীমকে হত্যা করে কক্ষে তালা মেরে গিয়েছে। মীমকে হত্যার পর আল আমিন বিষয়টি কারখানায় গিয়ে সহকর্মী আরিফকে জানিয়েছেন। পরে তিনি বিষয়টি বাড়ির অন্যদের জানান, পাশাপাশি পুলিশে খবর দেন।

ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে আসেন নিহত মীমের খালা সালমা আক্তার। তিনি বলেন, ৬ মাস আগে আল আমিন ও মীমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ভালোই চলছিল তাদের সংসার। কিছু দিন আগে স্ত্রীকে নিয়ে মাওনা উত্তরপাড়ায় রুম ভাড়া নেন আল আমিন। তবে হত্যা কী কারণে হতে পারে তা তিনি জানাতে পারেননি।

আরও পড়ুনঃ  সেনাবাহিনীর শীর্ষ পদে রদবদল

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ওসি আকবর আলী খান জানান, ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর থেকে স্বামী আল আমিনের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। হত্যাকাণ্ড কে বা কারা ঘটাল তা উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ