Monday, December 23, 2024

বড় খামারিদের কারসাজিতে ৫০০-তে নামছে না গরুর মাংস

আরও পড়ুন

বাজারে গরুর মাংসের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বড় খামারিদের কারসাজিতে। দুর্মূল্যের এ বাজারে স্বল্পমূল্যে যারাই গরুর মাংস বিক্রি করতে চাচ্ছেন, তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে খামারিদের অসাধু চক্র। একদিকে কোরবানিকে কেন্দ্র করে বাজার থেকে গরু উঠিয়ে নেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে হুমকি আর চাপ এসে হাজির হচ্ছে স্বল্পমূল্যের বিক্রেতাদের জীবনে। খামারিদের এই সিন্ডিকেট ভাঙা গেলে ৫০০ টাকায়ও গরুর মাংস কিনতে পারতো ক্রেতা সাধারণ; আবারও মাসে অন্তত একবার হলেও গরুর মাংসের স্বাদ নিতে পারতো মধ্যবিত্ত পরিবার।

খলিল, নয়ন ও উজ্জ্বলের মতো স্বল্পমূল্যে গরুর মাংস বিক্রেতাদের মতো এবার মাংস ব্যবসায়ী সমিতিও স্বীকার করলো, ৫০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি সম্ভব। কিন্তু এর জন্য আগে খামারিদের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।

সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের দাম বেঁধে দেওয়া ২৯ পণ্যের তালিকায় গরুর মাংস রাখা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম।

আরও পড়ুনঃ  মাংস পাঠাতে চায় ব্রাজিল, ঢাকার আগ্রহ আস্ত গরুতে

গরুর মাংসের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি জানান, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী ফার্মার অ্যাসোসিয়েশন যে কোনো সময় গরু কিনতে পারে, এই সুযোগটাই অসাধু খামারিরা নিচ্ছে। সামনে কোরবানি, খলিল মাংসের দাম কমিয়ে দেওয়ায়, গরুর দাম কমে গেছে। এতে সারা দেশের খামারিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। তারা বাজার থেকে গরু উঠিয়ে নিয়েছে। এই সিন্ডিকেট ভাঙলে মাত্র ৫০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করা সম্ভব।

এদিকে রাজধানীর বাজারে যখন গরুর মাংসের দাম ৭০০-৭৫০ টাকা, তখন শাহজাহানপুরের খলিল গোশত বিতানে ৫৯৫ টাকা দরে মাংস কিনতে দীর্ঘ লাইন দিচ্ছেন ক্রেতারা। মাঝে হঠাৎ গরুর দাম বাড়ার কারণ দেখিয়ে ১০০ টাকা বাড়িয়ে মাংস বিক্রির ঘোষণা দিয়েও দুদিনের মাথায় তা থেকে সরে আসেন ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান। লোকসান হলেও নিজের কথা রাখতে ২০ রোজা পর্যন্ত আগের দামেই বিক্রি করছেন মাংস।

আরও পড়ুনঃ  নিষেধাজ্ঞার ৩ দিনের মধ্যে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির প্রস্তাব অনুমোদিত

দাম ১০০ টাকা বাড়ানোর কারণ হিসেবে খলিল তখন বলেছিলেন, ‘বড় খামারিদের কাছে হেরে গেছি। বড় বড় খামারিরা ঈদ ও কোরবানিকে সামনে রেখে হাট থেকে গরু উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তাই ইদানিং গরুর দাম বাড়ছে।’

খলিলের মতো ৫৯৫ টাকায় বিক্রি করে এলেও সম্প্রতি নিজের দোকানে গরুর মাংসের দাম ৩৫ টাকা বাড়িয়েছেন মিরপুর ১১ এর উজ্জ্বল। তার গোশত বিতানে বর্তমানে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৩০ টাকায়। বড় খামারিদের কারসাজির কথা উঠে এসেছে তার বক্তব্যেও।

আরও পড়ুনঃ  দুদিনে দেশে আসবে ভারতের ১৬০০ টন পেঁয়াজ

সপ্তাহ দেড়েক আগেই বাজারে ৫০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করা সম্ভব বলে জানিয়েছিলেন ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। তখন তিনি বলেছিলেন, পথের হাটের ইজারা ও চাঁদাবাজি বন্ধ এবং পরিবহন সমস্যা দূর করা গেলে ৫০০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রি করা সম্ভব।

আর সিন্ডিকেট ভাঙতে শাহজাহানপুরের খলিলের মত, ভারতীয় গরু দেশে প্রবেশের অনুমতি যেন দেয় সরকার। অনুরোধ জানিয়ে খলিল সাংবাদিকদের মাধ্যমে বলেন, সরকার যেন মাংস ব্যবসায়ীদের কথা শোনে। অন্তত ১০টা দিনের জন্য ভারতীয় বর্ডার খুলে দেয়। যাতে ভারতীয় গরু দেশে আনা যায়। তাহলে গরুর মাংস ৫০০ টাকাতেও বিক্রি করা সম্ভব।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ