ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে অপহৃত জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর প্রধান কর্মকর্তা (সিও) আতিক উল্লাহ খান পরিবারের কাছে পাঠানো এক অডিও বার্তায় বলেছেন, ‘আশপাশে নেভি জাহাজ দেখলেই ওরা (জলদস্যুরা) আমাদের মাথায় অস্ত্র ঠেকাচ্ছে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বিকেলে পরিবারের কাছে এই অডিও বার্তাটি পাঠানো হয়। আতিক উল্লাহ খানের মামা জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অডিও বার্তা আতিক উল্লাহ খান বলেন, ‘আমাদের সামনে জলদস্যুরা অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আশপাশে নেভি জাহাজ দেখলেই তারা আমাদের মাথায় অস্ত্র ঠেকাচ্ছে। মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ওরা আমাদের জিম্মি করে রাখছে।’
আতিকুল্লাহ খান বলেন, ‘আমি যেখানে ঘুমাই সেখানে পাশ ফিরলেই দেখতে পাই আমার দিকে বড় বড় মেশিনগান তাক করে রেখেছে। এই অবস্থায় ঘুমানো অসম্ভব। মানসিকভাবে চাপের মধ্যে থাকলেও সুস্থ থাকার চেষ্টা করছি।’
জাহাজে মজুত খাবারের বিষয়ে এমভি আবদুল্লাহর প্রধান কর্মকর্তা বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, এখনও খাবার আছে। কিন্তু, যেহেতু জলদস্যুরাও আমাদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করছে, আমাদের পানি ব্যবহার করছে, আমাদের খাবার আর কতদিন যাবে সেটা বলতে পারছি না। আর হয়তো ১০ থেকে ১৫ দিন যেতে পারে। এরপর খাবার ও পানি শেষ হয়ে গেলে খুব কষ্টে পড়ে যাব।’
বাংলাদেশ সময় গত মঙ্গলবার দুপুরে শিল্প গ্রুপ কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। নাবিক ও ক্রুসহ জাহাজটিতে ২৩ জন বাংলাদেশি রয়েছেন। জাহাজটিকে ভারত মহাসাগর থেকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যায় জলদস্যুরা। অপহরণের সময় জাহাজটি ওই সময় সোমালিয়া উপকূল থেকে ৪৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছিল।
কেএসআরএম গ্রপের মিডিয়া অ্যাডভাইজার মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সব পক্ষের সাথে যোগাযোগ রেখে জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারের সব চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।’