দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সুযোগে গত কয়েকদিন রাজধানীজুড়ে ছিলো ডাকাতির আতঙ্ক। রাত গভীর হলেই বাড়ছিল ‘ডাকাত শঙ্কা’। কিন্তু গত দুদিনে এ উৎকণ্ঠাকে বিদায় জানিয়েছেন ঢাকাবাসী। আতঙ্ক পাল্টে গেছে উৎসবে। চলছে রাতভর রান্না ও খাওয়া-দাওয়া। মধ্যরাতেও রাস্তায় খেলায় মাতছে শিশুরা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) দিবাগত রাতে সরেজমিন দেখা যায়, ডাকাত ধরতে অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন এলাকাবাসী। বলেন, অন্তত একটা ডাকাত আসার অপেক্ষায় আছি। তবে সম্মিলিত প্রতিরোধের কারণেই দুষ্কৃতিকারীদের ঠেকানো গেছে বলেও জানান তারা।
এছাড়াও অলিগলিতে উৎসবের দেখা মেলে বহু জায়গায়। দেখা মেলে জমজমাট পিকনিকেরও। অস্থিরতার এমন দিনেও ব্যস্ততার আঁচ দেখা যায় বাবুর্চির হাড়িতে। ডাকাত ধরতে যারা রাস্তায় তাদের জন্যেই হরদম চলছে খাবারের আয়োজন। ফলে ডাকাত তো দূরের বিষয়, ছিঁচকে চোরেরও সাধ্য নেই এলাকায় প্রবেশের।
ধানমন্ডির টালি অফিস মোড়েও দেখা মেলে একই চিত্র। ভোর ৪টা বাজলেও সেখানে গিয়ে সজাগই পাওয়া যায় সবাইকে। আর তরুণরা মহড়ায় থাকায় এলাকাবাসী বেশ নিরাপদেই রাত পার করছেন বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, সরকার পতন ও পুলিশ না থাকায় গত বুধবার থেকে মোহাম্মদপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে ডাকাত আতঙ্ক। বিভিন্ন স্থানে মসজিদের মাইকে ডাকাত পড়ার ঘোষণা দেয়া হয়। যার ভিডিও অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। এরপরই ডাকাত প্রতিরোধে রাস্তায় নেমে আসেন সাধারণ মানুষ। বেশ কয়েক জায়গায় ধরাও পড়ে ডাকাত দল।
এরপর পাড়ায়-পাড়ায়, মহল্লায়-মহল্লায় দেখা মেলে সেচ্ছাসেবীদের চেকপোস্ট। ছোট বড় সবগুলো গাড়ি তল্লাশি করতে থাকে তারা। সন্দেহ হলেই শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। এলাকাবাসীর এমন সতর্ক অবস্থানের কারণে রাজধানীতে কমে যায় ডাকাতের আতঙ্ক।
অর্থাৎ, উৎকণ্ঠার দুদিন না পেরোতেই ভোল পাল্টে যায় রাজধানীবাসীর। আতঙ্ক পরিণত হয় উৎসবে। রাত বাড়তেই সববয়সী মানুষ নামতে থাকেন লাঠিসোটা হাতে। রীতিমতো ফেইসবুকে জানান দিয়েই চলছে রাজধানীবাসির এমন এলাকা পাহারা।