Saturday, July 19, 2025

১০০ বছর পর গ্রিসের ঐতিহাসিক ইয়েনি যামি মসজিদে ঈদের নামাজ

আরও পড়ুন

১০০ বছর পর নামাজের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে গ্রিসের থেসালিনিকির ঐতিহাসিক মসজিদ ইয়েনি।

জানা যায়, অর্থোডক্স খ্রিষ্টান সংখ্যাগরিষ্ঠদের দেশটিতে গত শতক থেকেই বন্ধ ছিল নামাজ আদায়। সম্প্রতি মত পাল্টায় দেশটির কর্তৃপক্ষ। ফলে এক শতাব্দী পর গত বুধবার (১০ এপ্রিল) খুলে দেওয়া হয় মসজিদটি। পরে মুসলিমরা আদায় করেন পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ।

৯৮ শতাংশ খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীর দেশ গ্রিস মাত্র ২ শতাংশ মুসলিমদের জন্য এবারের ঈদে প্রায় এক শতাব্দী আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রাচীন রাজধানী থেসালোনিকির ঐতিহাসিক মসজিদটি পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জন্য খুলে দেওয়ায় খুশি মুসলমানরা।

জানা যায়, অনন্য স্থাপত্যশৈলীর প্রাচীন নিদর্শনটি কখনো ব্যবহার হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে, কখনোবা জাদুঘর হিসেবে। একশ বছর পর আবারও মুসলিমদের জন্য মসজিদটি খুলে দেওয়ায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিমরা ফিরে পেলেন হারানো ঐতিহ্য।

আরও পড়ুনঃ  দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীর গুলিতে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীসহ নোয়াখালীর যুবক খুন

গ্রিসের এক নাগরিক বলেন, গ্রিসে মুসলিম আর সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এ ধরনের উদ্যোগ তারই বার্তা দেয়। আমার দেশ আমার ধর্মকে সম্মান করছে। প্রার্থনা করতেও সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। সুতরাং এটি খুবই ভালো আর গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।

অটোম্যান শাসনামলে মসজিদটি তৈরি হয়েছিল মূলত ডনমেহ সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য। যারা ইহুদি থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। ১৯২৩ সালে গ্রিস ও তুরস্কের মধ্যকার চুক্তি অনুসারে বিনিময় হয় দুই দেশের সংখ্যালঘু মুসলিম ও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী। এর ফলে বন্ধ হয়ে যায় মসজিদটিতে মুসলিমদের প্রার্থনা।

আরও পড়ুনঃ  মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর গুলি, প্রাণ গেল ইমামসহ ৬ জনের

গ্রিসের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরে অবস্থিত এ মসজিদ সম্পর্কে অজানা ছিলেন অনেকেই। সম্প্রতি দেশটির কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলে মসজিদটিতে ঈদের নামাজে অংশ নেন ৭০ মুসল্লি।

এসময় এক মুসল্লি বলেন, আমাদের বলা হয়েছে ১০০ বছরের মধ্যে এই প্রথম মসজিদটির দরজা খুলে দেওয়া হবে। তাই নামাজ পড়তে এসেছিলাম। এতদিন এটাকে জাদুঘর হিসেবে চিনলেও জানতাম না এটা একটা মসজিদ। প্রায় ৬৩ বছর ধরে এখানে আছি, আজই প্রথম দেখলাম।

প্রায় এক শতাব্দীরও বেশি সময়ের আগের মসজিদটির স্থাপত্যে দেখা মেলে ইসলামিক কারুকার্যের। ১৯০২ সালে ইতালিয়ান স্থপতি ভিতালিনো পোসেলির হাত ধরেই গড়ে ওঠে অনন্য নিদর্শনটি।

ইউরোপের দেশ গ্রিসের অধিকাংশই অর্থোডক্স খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী। ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশটিতে মুসলিমদের জন্য ছিল না কোনো মসজিদ। বর্তমানে মোট জনসংখ্যার মাত্র ২ শতাংশ ইসলাম ধর্মের অনুসারী।

আরও পড়ুনঃ  ইসরাইলে ৪৫০ কেজি ওজনের ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান!

২০২০ সালে এথেন্সের ভোটানিকোসে প্রথম সরকারিভাবে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়। মসজিদটি বর্তমানে পুরোপুরি চালু রয়েছে।

এবারের ঈদুল ফিতরেও ভোটানিকোসে স্থাপিত একমাত্র সরকারি মসজিদে হাজারো মুসলমান জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করেছেন। পাশাপাশি এথেন্সের বিভিন্ন এলাকায় বাংলাদেশিসহ এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের মুসলিম কমিউনিটির প্রতিষ্ঠিত অসংখ্য মসজিদ রয়েছে, যেগুলোতে ঈদের জামাত হয়েছে। এ ছাড়া নেয়া মানোলদায় বিশাল জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের অর্থায়নে ক্রয় করা জায়গায় নির্মিত মসজিদ মাঠে ওই ঈদের জামাতে হাজারো মুসল্লির ঢল নামে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ