এবার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ ক্যামেরার সামনে প্রকাশ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভুল ধরিয়ে দিয়েছেন। তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে, রাশিয়াই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালিয়েছে।
স্থানীয় সময় সোমবার হোয়াইট হাউসে এই ঘটনা ঘটে। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথম ইউরোপীয় নেতা হিসেবে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ম্যাখোঁ। ফরাসি প্রেসিডেন্ট জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি আত্মবিশ্বাসী এবং তিনি মনে করেন, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান ও টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি পথ খুঁজে পাওয়া সম্ভব।
তবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। বিশেষ করে, রাশিয়াই ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করেছে কি না এবং ইউক্রেনকে ইউরোপের সহায়তা কেবল ঋণ হিসেবে দেওয়া হচ্ছে—এমন দাবির ক্ষেত্রে দৃঢ়ভাবে ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন ম্যাখোঁ।
ওভাল অফিসে শুরুতে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘জেনে রাখুন, ইউরোপ ইউক্রেনকে সহায়তা হিসেবে ঋণ দিচ্ছে এবং তারা তাদের টাকা ফেরত পাবে।’ এ সময় ম্যাখোঁ ট্রাম্পকে থামিয়ে তার হাত ছুঁয়ে বলেন, ‘আসলে তা নয়। প্রকৃতপক্ষে, সোজা ভাষায়, আমরা মোট সহায়তার ৬০ শতাংশ বহন করেছি এবং সেটি যুক্তরাষ্ট্রের মতোই ঋণ, গ্যারান্টি, অনুদান ও সরাসরি আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে হয়েছে।’
ম্যাখোঁ আরও বলেন, ‘ইউরোপে রাশিয়ার ২৩ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের সম্পদ জব্দ করা হয়েছে, যা আলোচনার অংশ হিসেবে ইউক্রেনকে দেওয়া যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে এটি ঋণ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং শেষ পর্যন্ত রাশিয়াই এর মূল্য পরিশোধ করবে।’ জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আপনি যদি তেমনটাই মনে করেন তাহলে ঠিক আছে।’ এছাড়াও ট্রাম্প শীঘ্রই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে দেখা করার ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বৈঠকের এক পর্যায়ে তাদের একসাথে হাসিমুখে কথা বলতেও দেখা যায়।
উল্লেখ্য, সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প ইউক্রেন বা ইউরোপের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো বিলিয়ন বিলিয়ন সামরিক সাহায্য, মানবিক সহায়তা এবং পুনর্গঠন তহবিল প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে ট্রাম্প পরামর্শ দিয়েছেন, আর্থিক বোঝা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে পড়ে। তবে ম্যাখোঁর এই ‘অন-দ্য-স্পট’ সম্মিলিত প্রতিক্রিয়াতে ইউরোপের অগ্রণী ভূমিকা পুনরায় নিশ্চিত হয়েছে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক।