শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ সাতজনকে শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৬ কোটি টাকা আত্মসাতে অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় জামিন দিয়েছেন আদালত।
রোববার (৩ মার্চ) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ড. ইউনূসসহ সাতজনের জামিন মঞ্জুর করেন। একইসাথে এ মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন পেয়ে আদালতের সামনে অপেক্ষামান সাংবাদিকদের ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এটা ঐতিহাসিক একটি সময়। আজকের ছবিটি তুলে রাখুন। এটা ইতিহাসের সাক্ষী। কি জন্য এটা সাক্ষী হল যে, এটা একটা ঐতিহাসিক ঘটনা। যেহেতু একজন নোবেলজয়ীকে অর্থ আত্মসাত, জালিয়াতি ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি একা নই আমরা আরো সাতজন। যারা সারা জীবন কঠোর পরিশ্রম করেছি গরীব মানুষের জন্য। যারা চাকরি করতে এখানে আসেননি। তারা তাদের জীবন দানের জন্য এখানে এসেছেন। তারাও অর্থ আত্মসাৎ, জালিয়াতি এবং মানি লন্ডারিংয়ের দায়ে অভিযুক্ত। কাজেই এই ছবিটা একটা গুরুত্বপূর্ণ ছবি হবে। তারা এখানে উপস্থিত আছেন। তারা জন্ম-জন্মান্তরে বলতে পারবেন তারা এখানে উপস্থিত ছিলেন।’
ড. ইউনূস আরো বলেন, ‘আপনারা বিবেচনা করুন, দুর্নীতি দমন কমিশন আজকে একটি বিচারে বসলো এটা সঠিক কারণে হয়েছে কি না, সঠিকভাবে হয়েছে কি না। এদিনে দুদকের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হলো একজন নোবেল বিজয়ীকে। এটা রেকর্ডেড। জাতির অংশ হয়ে থাকবে। এটার জন্য কি আমরা গর্ববোধ করবো নাকি অপরাধ বোধ করবো? যারা সারাজীবন খেটে এ প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করে গেলেন, তাদেরও মামলার আসামি করা হলো।’
এর আগে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে দুদক মামলায় জামিন চেয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন ড. ইউনূসসহ অন্যরা।
আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে জামিন আবেদনের শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। সাথে ছিলেন ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ ও অ্যাডভোকেট এস এম মিজানুর রহমান। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।
বিচার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন যুক্তরাষ্ট্রসহ ৫ দেশের প্রতিনিধিরা
এদিকে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মামলার বিচার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নেদারল্যান্ডের হাইকমিশন থেকে প্রতিনিধিরা আদালতের আসেন। তারা মামলার শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।