গ্রাহক স্বার্থে মোবাইল ইন্টারনেটে বেধে দেয়া বিধিনিষেধ গ্রাহকের দোহাই দিয়েই তুলে নিচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এতে আবারও ইচ্ছা মতো ইন্টারনেট প্যাকেজ অফার করতে পারবে অপারেটররা। সেখান থেকে পছন্দের ভলিউম ও মেয়াদের ডাটা প্যাকেজ বেছে নিতে হবে গ্রাহকদের। নতুন সিদ্ধান্তে ইন্টারনেটের দাম আরও কমবে বলে আশা করছে বিটিআরসি।
দেশে ২০১৩ সালে থ্রিজি চালুর পর ইন্টারনেট সেবা দেয়া শুরু করে মোবাইল অপারেটররা। এরপর থেকে বিটিআরসির অনুমোদন নিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে গ্রাহককে ডাটা প্যাকেজ অফার করত কোম্পানিগুলো। তবে রকমারি প্যাকেজের অফারে গ্রাহক বিভ্রান্তি আর অপারেটরদের ডাটা কারসাজি ঠেকাতে ২০২২ সালে প্রথমবার হস্তক্ষেপ করে বিটিআরসি।
এক নির্দেশিকায় চার অপারেটরের ৩১২টি প্যাকেজ নামিয়ে আনা হয় ৯৫টিতে। ৩, ৭, ১৫, ৩০ দিন এবং আনলিমিটেড- এই পাঁচ মেয়াদে প্যাকেজ অফার করার বাধ্যবাধকতা ছিল মোবাইল অপারেটরদের।
বছর ঘুরতেই ২০২৩ সালের ১৫ অক্টোবরে আবারও গ্রাহক অভিযোগের কথা বলে বহুল ব্যবহৃত তিন দিন এবং ১৫ দিন মেয়াদ বাদ দেয়া হয়। ৯৫টি থেকে প্যাকেজের সংখ্যা নেমে আসে মাত্র ৪০টিতে। এতে গ্রাহকের প্যাকেজ বাছাইয়ের সুযোগ কমার পাশাপাশি ডাটার দামও বেড়ে যাওয়ার যুক্তি দিয়ে কোম্পানিগুলো আপত্তি জানালেও তা আমলে নেয়া হয়নি।
তবে দুই বছর পর বিটিআরসি ফিরছে সেই পুরনো পথেই। ডাটা প্যাকেজের মেয়াদ আর সংখ্যার বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার মধ্যেই গ্রাহক স্বার্থের সুরক্ষা দেখছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
বিটিআরসির পরিচালক (এসএস) লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম রেজাউর রহমান বলেন, গ্রাহকদের কথা বিবেচনা করে তারাই তাদের পরিকল্পনাটা করুক। গুনগত সেবা ও দামের মাধ্যমে গ্রাহকরাও উপকৃত হবে।
মোবাইল অপারেটররা জানাচ্ছে, নতুন নির্দেশনা কার্যকর হলে ডাটা কেনার ক্ষেত্রে গ্রাহক আরও স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবেন। গ্রাহক বিভ্রান্তি শূন্যের কোটায় আনতে বাড়তি নজর দেয়ার কথাও বলছেন তারা।
মোবাইল অপারেটর রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার সাহেদ আলম বলেন, ‘আমরা আশা করছি, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নতুন একটি নির্দেশনা পাব। এর উপর নির্ভর করে আমরা নতুনভাবে প্রোডাক্ট ডিজাইন সার্ভিস করতে পারব।’
বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, যার যেমন প্যাকেজ দরকার, সে যদি তেমন কিনতে পারে, তবে সেটা অবশ্যই গ্রাহকের জন্য ভালো হবে। ছোট অফারের জন্য আরও ভালো হবে। কারণ আমাদের গ্রাহকরা ছোট প্যাক পছন্দ করেন।
বর্তমানে দেশে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করেন সাড়ে ১২ কোটি গ্রাহক।