যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় সংস্থা ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের আওতাধীন মহাকাশবিষয়ক ইউনিট স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টার-এর তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার শক্তিশালী সোলার ফ্লেয়ার এবং সূর্যের পৃষ্ঠ থেকে উদগিরিত শক্তিশালী বিকিরণ সৌরঝড়ে রূপ নিবে।
ঝড়টির ঝাপটা ইস্টার্ন টাইমস (ইটি) ভোর থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে পৃথিবীতে আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঝড়টি শুক্রবার পর্যন্ত স্থায়ী থাকার আশঙ্কা রয়েছে। ইস্টার্ন টাইমের চেয়ে বাংলাদেশের স্থানীয় সময় ১০ ঘণ্টা এগিয়ে থাকে।
সেন্টারের কর্মকর্তাদের মতে, মারাত্মক সৌরঝড়টি, ১ থেকে ৫ স্কেলের মধ্যে ভয়ংকর শক্তিশালী চতুর্থ মাত্রার আওতাভুক্ত। এতে যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং স্যাটেলাইট অপারেশন ব্যাহত হতে পারে।
ভয়াবহ এই ঝড়ের সময় সূর্যের কেন্দ্রে প্লাজমা ও চুম্বকীয় তরঙ্গের বিরাট বিস্ফোরণ ঘটবে। সেই ঝড়ের ঝাপটা পৃথিবীতে আঘাত হানলে বৈদ্যুতিক ও চুম্বকীয় বিকিরণের ফলে চুম্বকীয় ক্ষেত্রের পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে।
ঝড়টি পৃথিবীর দিকে ঘণ্টায় ২৫ লাখ মাইলেরও বেশি বেগে (প্রায় ৪০ লাখ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়) আছড়ে পড়বে। তবে এটি ডিপ স্পেস ক্লাইমেট অবজারভেটরি এবং প্রদক্ষিণকারী অ্যাডভান্সড কম্পোজিশন এক্সপ্লোরার স্যাটেলাইটগুলোর অঞ্চলে না পৌঁছানো পর্যন্ত ঝড়ের তীব্রতা এবং এর বৈশিষ্ট্য নিয়ে আরও গভীরভাবে জানা যাবে না।
সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি মহাকাশ মানমন্দিরগুলো অতিক্রম করার পর সর্বোচ্চ ৩০ মিনিটের মধ্যে পৃথিবীতে পৌঁছাবে। স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টারের পরিষেবাবিষয়ক সমন্বয়কারী শন ডাহল স্থানীয় সময় বুধবার (৯ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানিয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সূর্যপৃষ্ঠের সানস্পট এআর৩৮৪২ অঞ্চলে এই ঝড়ের সূত্রপাত। গত মঙ্গলবার এই অঞ্চলে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটে। এতে গত পাঁচ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় শক্তিশালী সৌরঝড় তৈরি হয়। এই সৌরঝড়ের প্রভাবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ও ভূপৃষ্ঠে শক্তিশালী ভূচুম্বকীয় ঝড় তৈরি হবে।
সৌরঝড়ের ঝাপটার কারণে এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইজুড়ে রেডিও তরঙ্গ অকার্যকর হয়ে গেছে। সৌরঝড়ের ঝাপটায় পৃথিবীর রেডিও তরঙ্গ বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি পাওয়ার গ্রিডের ক্ষতি ও স্যাটেলাইট যোগাযোগব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
নাসার তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের আগে যেকোন সময় পৃথিবীতে পূর্ণশক্তিতে আঘাত হানবে সৌরঝড়টি। এ সময় সৌরঝড়ের বিকিরণের কারণে পৃথিবীর চৌম্বকমণ্ডল প্রভাবিত হবে। তখন আকাশে অরোরা নামের বিশেষ আলোকছটাও দেখা যাবে। তবে ঝড়ের প্রভাব কতটা শক্তিশালী হবে এবং কতটা সময় স্থায়ী থাকবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।