শিক্ষার্থীদের যে প্রশ্নের উত্তর অজানা, সেগুলো ফাঁকা রেখে দিয়েছিলেন। যারা টাকা দিয়েছেন, পরীক্ষার শেষে তাদের ওএমআর শিটে প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখে দিয়েছিলেন শিক্ষকরা। শুধু তাই নয়, যিনি চক্রের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড, তিনি হলেন আদতে সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকার (নীট-ইউজি) আয়োজক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির (এনটিএ) নিয়োগ করা ডেপুটি সুপারিটেন্ডেট।
হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ভারতের গুজরাটের গোধরায় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার এমনই একটি চক্রের হদিশ মিলল। সে ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে আছেন অভিযুক্ত শিক্ষক এনটিএয়ের নিযুক্ত করা ডেপুটি সুপারিটেন্ডেট তুষার ভট্ট, কোচিং সেন্টারের প্রতিনিধি পরশুরাম রায় এবং গোধরার জালারাম স্কুলের প্রধান শিক্ষক পুরুষোত্তম শর্মা। যে স্কুলে গত ৫ মে মেডিকেল প্রবেশিকা পরীক্ষা হয়েছিল।
গোধরার পুলিশ সুপার হিমাংশু সোলাঙ্কি বলেছেন, জালিয়াতির কথা জানতে পারেন পঞ্চমহলের জেলাশাসক। পরীক্ষার আগে কী কী করা হয়েছিল, সেটা জানতে পারেন। সে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান জেলা শিক্ষা অফিসার। তুষারের ফোন খতিয়ে দেখে ৩০ জনের একটি তালিকা পাওয়া যায়। তার গাড়ি থেকে নগদ ৭ লাখ টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে।
পরবর্তীতে পরশুরামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর থেকে আটটি ব্ল্যাঙ্কচেক পাওয়া গেছে। সেইসঙ্গে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোধরার পুলিশ সুপার। তিনি জানিয়েছেন, যে পড়ুয়াদের জালারাম স্কুলে ‘সিট’ পড়েছিল, তাঁদের বাবা-মা সে চেক দিয়েছিলেন।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ডেপুটি সুপারিটেন্ডেট তুষারের সঙ্গে প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন পরশুমরাম। টাকাও নিয়েছিলেন তিনি। যে প্রার্থীরা টাকা দিয়েছিলেন, তাঁদের বলা হয়েছিল যে অজানা প্রশ্নগুলির যেন উত্তর না দেন। ওএমআর শিট ফাঁকা রেখে আসতে বলেছিলেন। পরীক্ষার পরে ওএমআর শিট সিল করে মূল্যায়নের জন্য পাঠানোর কথা ছিল, তার আগে টাকা দেওয়া প্রার্থীদের শিটে সঠিক উত্তরটা দিয়ে দেবেন পুরুষোত্তম।
গোধরার ঘটনাটি সামনে আসার পরে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছেন কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রী এবং এনটিএয়ের মাধ্যমে নিট দুর্নীতি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে মোদী সরকার। গুজরাটের গোধরায় নিটের জালিয়াতির চক্র ফাঁস হয়ে যায়নি? সেইসঙ্গে তিনি প্রশ্ন করেন, নিটে যদি দুর্নীতি না হয়, তাহলে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে?