আবারও বিশ্বকে চমক দেখাল আফগানিস্তান। নিজ ঝুলিতে নিল আরও এক অন্যন্য অর্জন।
তথ্য বলছে, বিশ্বের অন্যতম দামী মশলা জাফরান, যার এক কেজির মূল্য বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫ লাখ টাকারও বেশি। এবার সেই জাফরান দিয়ে তাক লাগিয়ে দিল মুসলিম দেশটি।
আফগান সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজ জানিয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে ভালো জাফরান উৎপাদকের স্বীকৃতি পেয়েছে আফগানিস্তান। এবারই প্রথম নয়, এ নিয়ে টানা ৯ বার বিশ্বের সবচেয়ে ভালো মানের জাফরান উৎপাদন করল দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ আয়তনের দেশটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেলজিয়ামভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল টেস্ট ইনস্টিটিউটের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় আফগানিস্তানের জাফরান টানা নবমবারের মতো বিশ্বের সর্বোচ্চ মানের জাফরানের স্বীকৃতি পেয়েছে।
দেশটির কৃষি, সেচ ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আফগানিস্তান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জাফরান উৎপাদনকারী দেশ। চলতি মৌসুমে প্রায় পঞ্চাশ টন জাফরান উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে কাবুল।
আফগানিস্তানের কৃষি, সেচ ও প্রাণিসম্পদ উপমন্ত্রী সদর আজম ওসমানী বলেছেন, বিশ্বে আফগান পণ্যের নিজস্ব মান রয়েছে। তবে নবমবারের মতো আফগান জাফরান প্রথম স্থান অর্জন করেছে। এর মধ্য দিয়ে দেশটির পণ্যের গুণগতমান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি পেল।
মন্ত্রণালয়ের মতে, দেশের ২৬টি প্রদেশে জাফরান চাষ করা হয়, তবে দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ জাফরান চাষ হয় হেরাত প্রদেশে। হেরাতভিত্তিক একটি রপ্তানি সংস্থা এই প্রতিযোগিতায় আফগানিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করে।
জাফরান রপ্তানিকারক কোম্পানির প্রধান নজিবুল্লাহ রহমতি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে জাফরান নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কাজ করছি। কীভাবে উৎপাদন করতে হবে, বালাইনাশক দিতে হবে, এবং কীভাবে মহামূল্যবান এই মসলা প্যাকেটজাত করতে হবে, সে বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। যার ফলাফল গোটা জাতি পাচ্ছে।
গেল বছর ভারত, সৌদি আরব এবং অন্যান্য কয়েকটি দেশে পঁয়ত্রিশ মিলিয়ন ডলার মূল্যের প্রায় ৩০ টন জাফরান রপ্তানি করেছে আফগানিস্তান। বর্তমানে দেশীয় বাজারে প্রতি কেজি জাফরানের দাম ১ লাখ ২০ হাজার আফগানি।
আফগান জাফরান অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান মোহাম্মদ ইব্রাহিম আদেল বলেছেন, গেল আট মাসে ভারত, স্পেন এবং সৌদি আরবের মতো দেশে প্রায় ৩০ হাজার কিলো জাফরান রপ্তানি করা হয়েছে।
আফগানিস্তানের কৃষি, সেচ ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুনভাবে দেশের কৃষিখাত ঢেলে সাজাচ্ছে তারা। প্রথমেই আফিম চাষ বন্ধ করা হয়েছে। এখন জাফরানের মতো মহাউপকারী মসলা চাষে কৃষকদের উৎসাহী করা হচ্ছে।
চলতি মৌসুমে আরও ৮ হাজার হেক্টর জমিতে নতুন করে জাফরান চাষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে মোট উৎপাদন বেড়ে দাঁড়াবে ৫০ টন, তেমনটাই প্রত্যাশা আফগান সরকারের।