বেশ কিছুদিন ধরেই অভিভাবকদের মনে প্রশ্ন ছিল যে, যেহেতু ২০২৬ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষা হবে নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী, তাহলে কি পরিবর্তন আসবে এসএসসি পরীক্ষার নামে? এমন এক প্রশ্নের জবাবে বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আপাতত নাম পরিবর্তনের কোন সিদ্ধান্ত নেই বা নাম পরিবর্তন করা নিয়ে কোন কিছু ভাবাও হয়নি। তবে ৫ ঘণ্টার পরীক্ষাসহ নতুন কারিকুলাম নিয়ে বেশ কিছু স্পষ্ট ধারণা দিয়েছে বোর্ড।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, নতুন কারিকুলাম আসলেও এসএসসি পরীক্ষার নামে কোন পরিবর্তন আসবে না।
‘নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হবে কার্যক্রমভিত্তিক এবং লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে। কার্যক্রম বলতে বোঝানো হয়েছে অ্যাসাইনমেন্ট করা, উপস্থাপন, অনুসন্ধান, প্রদর্শন, পরিকল্পনা প্রণয়ন ইত্যাদি। কার্যক্রমের পর অনুষ্ঠিত হবে লিখিত পরীক্ষা। লিখিত অংশের প্রশ্নপত্র হবে কার্যক্রমের বিষয়বস্তুর সাথে মিল রেখে।’
নতুন নিয়মে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করার বিষয়ে মো. মশিউজ্জামান বলেন, আমরা এ সংক্রান্ত একটি খসড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটির কাছে জমা দিয়েছি। কমিটি তা মূল্যায়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। এরপর মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে। এটি একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
তিনি আরও বলেন, ৫ ঘণ্টার পরীক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পুরো সময়টা পরীক্ষার কেন্দ্রে থাকতে হবে, পরীক্ষার হলে নয়। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা চাহিদা অনুযায়ী প্রথমে বিভিন্ন কার্যকলাপে অংশ নিবেন। এর সময় বিষয়ভেদে একেকরকম হবে। যে পরীক্ষার জন্য যতটুকু সময় বরাদ্দ দেয়া হবে ততক্ষণ তারা ব্যবহারিক কার্যক্রমে অংশ নিবেন। এরপর বিরতি নিয়ে তারা ওই সময়টাতে কী করেছেন, তা খাতায় তুলে ধরবে। এই সময় সাধারণ পাবলিক পরীক্ষার মতোই খাতা দেয়া হবে। শিক্ষার্থীরা তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে খাতায় লিখবেন। আর পরীক্ষা শেষে একযোগে ফল প্রকাশ করবে শিক্ষা বোর্ডগুলো।
বোর্ডসূত্রে জানা গেছে, নতুন কারিকুলামে প্রতিটি মিড টার্ম ও চূড়ান্ত পরীক্ষা হবে পাঁচ ঘণ্টার। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা হবে অন্য কেন্দ্রে। আর চতুর্থ থেকে নবম শ্রেণির পরীক্ষা হবে নিজ স্কুলে। এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চলবে। এতে ছয়টি সেশন থাকবে।
এছাড়াও নতুন কারিকুলামে, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১০টি সাধারণ বিষয় পড়তে হবে। এসএসসি পরীক্ষা হবে দশম শ্রেণির পাঠ্যক্রমের ওপর। আর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে প্রতি বছর দুটি পাবলিক পরীক্ষা হবে। গত বছর ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়েছে। চলতি বছর দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে এবং আগামী বছর চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে চালু হবে এ নিয়ম। এর আলোকে ২০২৬ সালে এসএসসি পরীক্ষা হবে।