প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, দেশে যুক্তরাষ্ট্রের পছন্দের সরকার যতদিন না ক্ষমতায় আসছে, ততদিন পর্যন্ত তাদের কাছে বাংলাদেশের সব নির্বাচনই ত্রুটিপূর্ণ মনে হবে। সোমবার (১৮ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে করা এক স্ট্যাটাসে তিনি এই মন্তব্য করেন।
পোস্টে জয় লেখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মতে, বাংলাদেশে যদি তাদের ‘পাপেট’ সরকার ক্ষমতায় না আসে, কোন নির্বাচনই ত্রুটিমুক্ত নয়!’ পোস্টের বাকি অংশে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করতে দেখা যায় তাকে।
গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) ও ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেটি প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নিজের প্রতিক্রিয়া জানালেন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা জয়।
এনডিআই ও আইআরআই-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রচার ও নির্বাচনের দিনসহ অন্যান্য সময়ে আগের নির্বাচনগুলোর চেয়ে শারীরিক এবং অনলাইন সহিংসতা কম হয়েছে। তবে, বাংলাদেশের নির্বাচনে প্রতিযোগিতার যথেষ্ঠ অভাব ছিল বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এটির কারণ হিসেবে দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র অংশগ্রহণ না করাটাও পরোক্ষভাবে উঠে আসে। সর্বশেষ ৩টি জাতীয় নির্বাচনের ২টি সরাসরি বয়কট করে বিএনপিসহ তাদের নেতৃত্বাধীন জোট।
এদিকে, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে সরব অবস্থান ও বিভিন্ন মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছিল। বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নির্বাচন পরবর্তী ১০ মার্চ দেশের কয়েকটি সংবাদপত্রে উপ-সম্পাদকীয় লেখেন। সেই লেখার মূলভাবনা ছিল, বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও এর ভবিষ্যত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ বেশ ইতিবাচক ও গভীর। তবে পিটার হাসের এই লেখা কূটনৈতিক নীতির পরিপন্থি বলেও মন্তব্য করেছিলেন বিশ্লেষকরা।
উল্লেখ্য, গাজা যুদ্ধে নিরীহ ফিলিস্তিনীদের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রকে মানবিক মন্তব্য করতে দেখেনি বিশ্ব। অপরদিকে, পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশটির জনপ্রিয় নেতা ইমরান খানের জেল ও তার দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যখন দেশটির সরকার বাধা দেয়, তখনও কোন মন্তব্য আসেনি ওয়াশিংটন থেকে। শান্তিপ্রিয় ও গণতন্ত্র নিয়ে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্রের এমন দ্বিমুখী অবস্থানের জন্য সজীব ওয়াজেদ জয়ের মন্তব্যকে যথার্থই বলছেন বিশ্লেষকরা।