ঠাকুরগাও-দিনাজপুর মহাসড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত ফিরোজ হোসেনের (১৭) মৃত্যু হয়েছে। রোববার (১০ মার্চ) ভোর ৪টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ফিরোজ হোসেন ঠাকুরগাঁও সদরের পূর্ব বেগুনবাড়ী গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে। এ নিয়ে দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে দুই বন্ধুসহ তিনজন। একই মোটরসাইকেলে থাকা গুরুতর আহত আরেক বন্ধু রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে ঠাকুরগাও-দিনাজপুর মহাসড়কের ২৯ মাইল এলাকায় ঠাকুরগাঁও থেকে আসা একটি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে ফিরোজদের মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে ফিরোজের বন্ধু একই গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে রাসেল ইসলাম (১৭) ও অ্যাম্বুলেন্সের যাত্রী সুমিত্রা রাণী (৫৫) নিহত হন। একই মোটরসাইকেলের আরোহী বাকি দুই বন্ধু ফিরোজ ও মেহেদীকে (১৭) গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ ভোরে মারা যান ফিরোজ হোসেন।
ফিরোজের মরদেহ তার নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হলে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। স্বজন-প্রতিবেশীরা জানায়, একই গ্রামে জন্ম তিনজনের। বেড়ে ওঠাও একসঙ্গে। দিন নেই, রাত নেই একজনের প্রয়োজনে অন্য দুজন ছুটে আসত। যেন তিন শরীরের এক আত্মা ছিল তারা। দুজন পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে। আরেকজনের অবস্থাও ভালো নয়।
ফিরোজের মা ফিরোজা বেগম বলেন, ‘বাড়ি থেকে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে কিছু টাকা নিয়েছিল বাবার কাছ থেকে। সেই যে গেল বাড়ি থেকে। এখন লাশ হয়ে ফিরে এলো বাড়িতে।’
তিন দিন আগে ছেলেকে হারিয়ে কাঁদতে কাঁদতে রাসেলের মা লায়লা বেগম বলছিলেন, ‘আমি এখন কী নিয়া বাঁচব। আমার মানিকেরে, বুকের ধনরে আমার কাছে আইনা দাও।’
এই বিষয়ে বোদা হাইওয়ে থানার পুলিশের উপপরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম বলেন, অ্যাম্বুলেন্সের চাকা ব্রাস্ট হলে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলটিকে পেছন থেকে জোরে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলটি রাস্তার পাশে উল্টে পড়ে ঘটনাস্থলেই দুইজনের মৃত্যু হয়।