রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত হয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বোরোবি) প্রধান সমন্বয়ক আবু সাঈদ (২৪)। মা-বাবাসহ নয় ভাই-বোনের আকাশ সমান স্বপ্ন ছিল তাকে ঘিরে। কিন্তু আজ শুধুই হাহাকার আর আর্তনাদ। এ চিত্র শুধু আবু সাঈদের পরিবারে নয়, পুরো গ্রামজুড়ে।
আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। পেশায় একজন দিনমজুর। ছেলের কথা বলতেই তিনি হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন। তিনি বলেন, ছয় ভাই, তিন বোনের মধ্যে আবু সাঈদ ছিল সবার ছোট।
অর্থাভাবে কোনো ছেলে-মেয়েকে লেখাপড়া করাতে পারিনি। আবু সাঈদ ছোট থেকেই ছিল অত্যন্ত মেধাবী। সে নিজ চেষ্টায় লেখাপড়া করে এতদূর পর্যন্ত এসেছিল। পরিবারসহ এলাকাবাসীর অনেক স্বপ্ন ছিল আবু সাঈদকে ঘিরে।
নিহত আবু সাঈদের ছোট বোন সুমি আর্তনাদ করে বলেন, ‘হামার ভাইকে ওরা মেরে ফেলল ক্যান? কেটা হামাক এনা বোন কয়া ডাকপি-রে।
আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি নির্বাক হয়ে সবার দিকে চেয়ে আছেন আর কিছু সময় পর পর বাবা-বাবা বলে চিৎকার দিয়ে উঠছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে বোরোবিতে চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আবু সাঈদ নিহত হন। তার শরীরে ছররা গুলির অসংখ্য চিহ্ন পাওয়া গেছে। জানা গেছে, দুপুরে বেরোবির কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শহরের লালবাগ এলাকায় থেকে ক্যাম্পাসের দিকে যান।
এরপর ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও ছররা গুলি ছোড়ে। এ সংঘর্ষে নিহত হন তিনি।