পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম সরদারের ছেলে খাজুরা গ্রামের বাসিন্দা ইউনুস সরদার (৩১) দুই কন্যা সন্তানসহ স্ত্রী রাবেয়াকে রেখে নতুন সংসার গড়তে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া আপন ভাগ্নিকে নিয়ে বাড়ি ছেড়েছে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি এনজিও থেকে লোন নিয়ে ওই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে পালিয়ে যান খালু ইউনুস। পরবর্তীতে উভয় পরিবার জানতে পারে যে, তারা বিয়ে করেছেন। কিন্তু বাড়ি ছাড়ার ১ মাস পার হলেও কোথায় আছেন সেই হদিস মেলেনি এখনো।
ইউনুস সরদারের দুই সন্তানের একজনের বয়স ৩ মাস। অন্যজনের বয়স ৯ বছর, তবে শিশুটি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন।
এদিকে দুই সন্তান ও স্ত্রীকে ফেলে যাওয়ায় তাঁদের কাটছে দুর্বিষহ জীবন। ইউনুস চলে যাওয়ায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছে তার স্ত্রী রাবেয়া আক্তার। দুই সন্তানের ক্ষুধার যন্ত্রণা, সামাজিক বঞ্চনা এবং ঋণে জর্জরিত পরিবারটি পাওনাদারদের চাপে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে তাঁরা। ভাগ্নিকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার কারণে একদিকে আর্থিক সংকটে একেবারে খারাপ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে, অন্যদিকে সামাজিকভাবে একটি ঘৃণার কাজ করেছে যে কারণে মানুষ নানা কথা বলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকার পাশাপাশি বসবাস করে আসছে ইউনুস ও ওই মেয়ের পরিবার। দীর্ঘদিন একইস্থানে থাকায় তাঁদের মধ্যে খালু-ভাগ্নি সম্পর্ক হলেও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টিকটকে তাঁদের নিয়মিত যোগাযোগ হতো। যা নিয়ে দুই পরিবারের মাঝে অনেকসময় কথা কাটাকাটিও হতো।
ইউনুস সরদারের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার জানান, আমার এক মেয়ে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, আর এক মেয়ের বয়স তিন মাস মাত্র। এনজিও থেকে ২ লক্ষ টাকা ঋণ নেয়া। এনজিওর লোকেরা প্রতিদিন আসে টাকার জন্য, আমার সন্তানদের খাবারের জন্য ঘরে পানি ছাড়া কিছুই নেই। আমার ছোট ভাই দিনমজুরি কাজ করে গত এক মাস যাবত ভাই আমার কাছে থাকে তার ইনকামের টাকায় আমরা খাই। মাঝে মাঝে না খেয়ে থাকে আশেপাশের লোকজন কিছু খাবার দেয়। আপনারা একটু তাকে খুঁজে বের করে আমার পরিবারটাকে বাঁচান। না হয় আমার আত্মহত্যা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ দেশের যে প্রান্তে হোক ওদেরকে দেখলে ধরিয়ে দেবেন।
পালিয়ে যাওয়া ওই শিক্ষার্থীর মা জানান, আমার মেয়ে দাদাবাড়ি যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়েছে। পরে ওর দাদা বাড়িতে না পৌঁছালে আমরা খোঁজাখুজি করে জানতে পারি আমার বোনের স্বামীর সাথে পালিয়েছে। এরপরে আমরা থানায় জানিয়েছি। থানা থেকে পুলিশ এসে উভয় পরিবারের সঙ্গে কথা বলে গেছে।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন তালুকদার জানান, বিষয়টি আমি অবগত নই, জানার চেষ্টা করছি। তবে লিখিত অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।