এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের গুদামের আগুন বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) নিয়ন্ত্রণে আসে। শুক্রবার (৮ মার্চ) সকাল থেকেই পরিশোধিত চিনি বাজারে সরবরাহ শুরু হয় এবং শনিবার (০৯ মার্চ) থেকে মূল কারখানায় উৎপাদন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন এস আলম গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক আখতার হাসান।
এস আলম সুগার মিল সূত্রে জানা যায়, কারখানায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পরিশোধিত চিনির মজুদ রয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে এসব চিনি বাজারে সরবরাহ করা শুরু হয়েছে। এদিন ২০০ মেট্রিক টক চিনি বাজারে সরবরাহ করার কথা রয়েছে।
নতুন করে উৎপাদনে যাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান, নতুন করে কারখানায় উৎপাদনে যাওয়ার আগে প্রথমে পুরো কারখানা পরিষ্কার করতে হবে। তারপর সব যন্ত্রপাতি পরীক্ষা করতে হবে। পরীক্ষার পর যেগুলো সচল কিংবা কাজের উপযোগী রয়েছে সেগুলো রেখে বাকি যন্ত্রপাতি পরিবর্তন করেই তারপর উৎপাদনে যেতে হবে।
শুক্রবার এস আলম সুগার মিলে গিয়ে দেখা যায়, আগুন পুরোপুরি নিভে গেছে। এখন পুরোদমে বর্জ্য অপসারণের কাজ চলছে। গলিত চিনি এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন খালি জায়গায় সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। প্রায় ৩০টি ডাম্প ট্রাক দিয়ে গলিত র-সুগার ডাম্পিং করার পাশাপাশি সর্বোচ্চ চেষ্টা করে হচ্ছে যেন এগুলো নদীতে না পড়ে। এছাড়া গুদামের দেয়াল ধসে পড়ার শঙ্কায় দেওয়া হয়েছে বালুর বাঁধ। আগুন নিভে গেলেও ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট মোতায়েন করা আছে সেখানে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও কারখানায় দেখা যায়।
এস আলম গ্রুপ থেকে পাওয়া তথ্য মতে, অগ্নিকাণ্ডের ফলে পুড়ে গেছে ১ লাখ টনের মতো অপরিশোধিত চিনি। কারখানার অন্যান্য ৩টি গুদাম অক্ষত রয়েছে, যেখানে ৬ লাখ ৪১ হাজার মেট্রিক টন চিনির কাঁচামাল রয়েছে। কারখানায় আগামী ১০-১২ দিনের পরিশোধিত চিনি প্রস্তুত রয়েছে। যা ভোক্তাদের জন্য বাজারের সরবরাহ করা হবে।
আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক দীনমনি শর্মা বলেন, গুদামের আগুন প্রায় নিভে গেছে। কিন্তু পুড়ে যাওয়া চিনি পরিষ্কার করার সময় কিছু স্থানে ধোঁয়া বের হওয়ায় আমরা পুরো নির্বাপণ বলছি না।
এস আলম গ্রুপের ব্যবস্থাপক (এইচআর) মোহাম্মদ হোসেন বলেন, কারখানার ৪ গুদামে চার লাখ টন অপরিশোধিত চিনি ছিল। এর মধ্যে পুড়ে যাওয়া গুদামের এক লাখ টন চিনি নষ্ট হয়েছে। বাইরে আরেকটি গুদামে ২৫ হাজার টনের মত পরিশোধিত চিনি ছিল, ওই গুদাম অক্ষত রয়েছে। ইতিমধ্যে সেখান থেকে পরিশোধিত চিনি বাজারে ছাড়া শুরু হয়েছে।
এস আলম গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক আখতার হাসান বলেন, ইতোমধ্যে পরিশোধিত থাকা চিনির মজুত থেকে বাজারে সরবরাহ শুরু হচ্ছে। শনিবার থেকে মূল কারখানায় উৎপাদন শুরু হবে। সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে এই অগ্নিদুর্যোগের কোনো প্রভাব যেন বাজারে না পড়ে।